ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং

বন্ড

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং - শেয়ার, বন্ড ও ডিবেঞ্চার | NCTB BOOK

বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের আরেকটি হাতিয়ার হচ্ছে বন্ড। পূর্বেই জেনেছ যে দলিল বা চুক্তিপত্রের মাধ্যমে কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের থেকে ঋণ মূলধন সংস্থান করে সেটিকে বন্ড বলা হয়। দেশে অধিকাংশ কোম্পানি ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ঋণ মূলধনের সংস্থান করে। ফলে বিনিয়োগের হাতিয়ার হিসেবে বন্ড এখনও আমাদের দেশে খুব বেশি পরিচিতি পায়নি।

বিনিয়োগকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে বন্ডের কিছু আলাদা স্বকীয়তা বা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো:

ক) জামানত : বন্ডের বিপরীতে কোম্পানি সাধারণত স্থায়ী সম্পত্তি বা দলিলপত্রাদি জামানত হিসেবে রাখে। ফলে কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের পাওনা পরিশোধ করতে না পারলে এসব সম্পত্তি বিক্রি করে বিনিয়োগকারীরা তাদের অর্থ আদায় করতে পারে।

খ) পরিপক্বতার তারিখ : কোম্পানি কর্তৃক ইস্যুকৃত বন্ডের একটি নির্দিষ্ট পরিপক্বতার তারিখ থাকে। উক্ত পরিপক্বতার তারিখে বিনিয়োগকারী বন্ডে উল্লিখিত লিখিত মূল্য ফেরত পায়।

গ) ঋণদাতা : বন্ড মালিকরা কোম্পানির ঋণদাতা হিসেবে গণ্য হয়। ফলে তাদের কোনো ভোটাধিকার থাকে না।

ঘ) রূপান্তরযোগ্যতা : কোম্পানি অনেক সময় বিনিয়োগকারীদের কাছে রূপান্তরযোগ্য বন্ড বিক্রি করে থাকে। এক্ষেত্রে বন্ড মালিকরা ইচ্ছে করলে ঋণপত্রে উল্লিখিত শর্ত অনুসারে তাদের ধারণকৃত বন্ডকে নির্দিষ্টসংখ্যক সাধারণ শেয়ারে রূপান্তর করতে পারে।

সুবিধা

ক) সুদের হার: সুদের হার নির্দিষ্ট থাকে বিধায় বন্ডে বিনিয়োগকারীদের আয় নির্দিষ্ট থাকে। ফলে তাদের আয়ে অনিশ্চয়তা কম থাকে। তবে কোনো কোনো সময় সুদের হার পরিবর্তনশীলও হতে পারে।

খ) ঝুঁকি কম: বন্ডের বিপরীতে স্থায়ী বা অন্যান্য সম্পত্তি জামানত হিসেবে রাখা হয় বিধায় বন্ড বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি হ্রাস পায়।

গ) মুনাফা এবং সম্পদের উপর অধিকার : কোম্পানি কর্তৃক অর্জিত আয় থেকে সর্বপ্রথম বক্ত মালিকদের সুদ প্রদান করা হয়। অন্যদিকে কোম্পানি বিলুপ্তি বা অবসায়নকালে সম্পদ বিক্রির প্রাপ্ত অর্থ থেকে সর্বপ্রথম বন্ড মালিকদের পাওনা টাকা পরিশোধ করে অন্যদের দাবি পূরণ করা হয়। অর্থাৎ বস্তু মালিকদের দাবি সাধারণ এবং অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের দাবি থেকে অগ্রগণ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

অসুবিধা

ক) কম আয় হার : সাধারণ শেয়ার এবং অগ্রাধিকার শেয়ারের তুলনায় কম ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় বল মালিকদের আয় হার কম হয়।

খ) নিয়ন্ত্রণ : অগ্রাধিকার শেয়ারের ন্যায় বন্ড মালিকদের ভোটাধিকার থাকে না বিধায় বক্ত মালিকরা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে অংশগ্রহণ করতে পারে না।

Content updated By

আরও দেখুন...

Promotion